somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মানবিক আহ্বান : বুয়েটছাত্র শান্তর বাবার নিঃশ্বাস চিরশান্ত হতে চাইছে; আমাদের কি করণীয় নেই কিছুই?

০৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলেটির নাম মারুফ হাসান শান্ত, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বুয়েটে সে আমার একবছরের জুনিয়র- পড়াশোনা করছে ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (লেভেল২/ টার্ম-২),অথচ এইটুকু বয়সেই পর্বতপ্রমাণ দায়িত্বের বোঝা তার কাধে চেপে বসেছে, কারণ তার বাবার অস্তিত্ব এখন মহাসংকটে- হেপাটাইটিস 'সি' - ঘটিত লিভার সিরোসিস তাকে কব্জা করে নিয়েছে, ইতিমধ্যে একবার তিনি কোমাতেও ছিলেন, বর্তমান বন্দোবস্তানুযায়ী লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে অতিসত্ত্বর- বিরল ও ঝুঁকিপূর্ণ এই অপারেশনটি হওয়ার কথা দিল্লিতে, যার জন্য প্রাথমিক খরচ অনুমান করা হচ্ছে ৫০- ৬০লক্ষ টাকার মত ; একটি মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের একার পক্ষে এই বিশাল খরচ যোগানোটা দুরূহ ও কিছুটা অসম্ভবও; তাই আমাদের মানবিকতার মূল্যায়নটাও এখান থেকেই।

শান্তর বাবা, মোঃ আলী আকবর, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কো-অপারেটিং এন্ড মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর। ওরা ৩ভাই-বোন; বড়বোন ময়মনসিংহ মেডিকেল থেকে এম,বি,বি,এস পাশ করেছেন, অন্যবোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন, 'ও' সর্বকনিষ্ঠ- একটি ছিমছাম পরিবারেই চিত্র যেন!

ব্যক্তিমানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব মতাদর্শ আছে, মতানৈক্য আছে, আছে রেষারেষিও, কিন্তু মানবিক ইস্যুতে সম্ভবত আমরা সবাই একইবিন্দুতেই মিলিত হই। মানবিক ইস্যুতে আমাদের এভাবে সমবেত হওয়ার অসংখ্য দৃষ্টান্তও রয়েছে- অমিত, উপমা, জনি, এরকম অনেক আছে।একজন শিক্ষক এবং একইসঙ্গে একজন অভিভাবকের জন্য আরও একবার নাহয় আমরা মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ হলাম।
শান্ত নামের এই তরুণটি কিন্তু মোটেই একা নয়, সমগ্র বুয়েটছাত্রসমাজ তার পাশে দাঁড়িয়েছে- গত কয়েকদিন যাবৎ বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে বুথ খুলে শিক্ষার্থীরা দিনভর বসে আছে, প্রত্যেক ক্লাস থেকে শিক্ষার্থীরা যে যেভাবে পারে অর্থসাহায্য করছে, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হলের মাসিক ফিস্ট বাতিল করা হয়েছে- ধারণা করছি সবগুলো হলেই এ মাসের ফিস্ট বাতিল করে ফিস্টের জন্য বরাদ্দকৃত টাকাটি এই উদ্দেশ্যে ব্যয় করা হবে। শুনেছি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের বৃত্তির টাকা এই চিকিৎসাখাতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নাকি অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু এতদসত্ত্বেও প্রয়োজনীয় টাকার তুলনায় আমাদের এই স্বতঃস্ফূর্ত অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ নিতান্তই অপ্রতুল, সেজন্যই বৃহৎ পরিসরে উদ্যোগটি ছড়িয়ে দেয়া ও অন্যান্যদের এগিয়ে আসাটা জরুরী হয়ে পড়েছে। আমাদের সম্মিলিত অংশ্রগ্রহণেই হয়ত একটি অসহায় পরিবারকে কিছুটা হলেও ভরসা দিতে পারে।

শান্তকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনিনা। তবে ওর ব্যাচমেটদের মারফত ও বিভিন্ন পোস্টারের লেখা পড়ে জানতে পারলাম বাবার জন্য নিজের লিভারের অর্ধেকটা দিতে সে প্রস্তুত আছে, যেকারণে তাকেও কঠিন অপারেশনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, এইসব জটিলতা ও ঝামেলায় চলতি সেমিস্টারটাও সে ড্রপ করতে বাধ্য হয়েছে শুনলাম। বুয়েটের পড়াশোনার ধরনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই সেমিস্টার ড্রপটি তার শিক্ষাজীবনকে বেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে, তবুও একটি সেমিস্টারের মূল্য কখনই জীবনের সমতূল্য হতে পারেনা। একটি ২০-২১বছরের নির্মল তরুণের ভাবনাজুড়ে এখন হয়ত বন্ধুদের সাথে ক্যাফেতে আড্ডা দিয়ে ক্লাস-সেশনাল-কুইজ পরীক্ষা, এইসব থাকার কথা, কিন্তু বাস্তবতা বড়ই নির্মম কখনো কখনো!
অহেতুক লেখা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছিনা; পরিচিতজনেরা সাধ্যমত চেষ্টা করছে, সেইসাথে অন্যদেরও আহ্বান করছি ছেলেটির পাশের দাঁড়ানোর জন্য - একটি ঝলমলে জীবন কি ঝরে যাবে আমাদেরই অক্ষমতায়?

শান্তকে সাহায্য করতে চাইলে:
একাউন্ট নং : 34228774
সোনালী ব্যাংক, বুয়েট শাখা।
ব্যক্তিগত যোগাযোগ : 01717838906

আপডেট:
১.শান্তর বাবাকে এই এপ্রিলের ২৩ তারিখের মধ্যেই দিল্লি যেতে হবে
২.বুয়েট ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে বুয়েট এর আডিটরিয়ামে film festival এর আয়োজন করা হচ্ছে । সম্ভাব্য তারিখঃ ১৪,১৫,১৬,১৭ এপ্রিল ( তারিখের পরিবর্তন হতে পারে ) ।
৩.লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ০১৭১৭৮৩৮৯০৬ নম্বরে যোগাযোগ করুন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ৯:৫৬
৫৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×